মাহমুদুল হাসান রাকিব : সরেজমিনে দেখা যায়, ৩৫ বছর বয়সী মহিলা হাসিনা বেগম শিখছেন বাইক চালানো। বাইকের পেছনে এক হাত শক্ত হাতে ধরে আছেন শাহিনুর লিপি। অন্য হাতে দিচ্ছেন দিক নির্দেশনা। পড়ে গেলে আবারও উঠিয়ে বাইক চালানোর কৌশল রপ্ত করাচ্ছেন। মাঝে-মধ্যে প্রশিক্ষণার্থীদের সাহসও যুগাচ্ছেন।
শাহিনুর লিপি বিবিসি নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট নিউজ কে জানান,আমার সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তির পর বাসা থেকে স্কুলে যেতে খুবই কষ্ট হতো। বাসের জন্য অপেক্ষা করতে করতে প্রায় সময় ক্লাসে দেরি হয়ে যেত। স্বামী কে বাইক কিনে দেওয়ার কথা বলার আগে তিনি আগে বাইক চালানো শিখে ফেলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু শিখার জন্য কাউকে পাননি।
এক মাস পরে অনলাইনে ফেসবুকের মাধ্যমে চট্টগ্রামে সিআরবি এক বড় আপুর সহযোগিতায় তিনি বাইক চালানো শেখেন। পরে স্বামী তাকে একটি বাইক কিনে দেন। এখন সেই বাইক দিয়ে সন্তানদের স্কুলে আসা যাওয়াসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারেন শাহিনুর লিপি।
যদিও শুরুর দিকে বাইকচালক হিসেবে পথেঘাটে কম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়নি শাহিনুর লিপিকে। এমনকি বাহিরে যাওয়ার পথে অনেক টিটকারিও শুনতে হয়েছে তাকে। তবে এখন বদলে গেছে সেসব চিত্র। সবাই এখন বাইক চালানোকে প্রশংসার চোখে দেখেন।
প্রথমে দিচ্ছেন আত্মবিশ্বাসের ঝুড়ি। দিচ্ছেন এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা। তারপর একে একে বাইক চালানোর কৌশল রপ্ত করা শেখাচ্ছেন তিনি। পড়ে গেলে আবারও উঠিয়ে সাহস দিচ্ছেন আর বলছেন, ‘এই-তো হচ্ছে, আপনিই পারবেন।’
শনিবার (২৯ জুন) সকাল ৮টা। নগরের ০৯ নং ওয়ার্ড আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটি এলাকায় এমন দৃশ্যেরই দেখা মিললো।
যেখানে নারীদের বাইক চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন নারী উদ্যোক্তা শাহিনুর লিপি।পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাসে উঠার নোংরা প্রতিযোগিতা কিংবা যানজটে সময়ের অপচয়কে মেনে নিতে পারেননি শাহিনুর লিপি।
বাধ্য হয়ে শিখেন বাইক চালানো। সেই থেকে এই ছাত্রী এখন নিজেই বাইক চালিয়েই বিভিন্ন স্থানে যান।শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়, নারীদের আত্মবিশ্বাসী ও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ২০-২৫ জন নারীকে বাইক চালানও শেখাচ্ছেন তিনি।
সাতকানিয়া থেকে শিখতে আসা ফাতেমা আক্তার (৪০)।বেসরকারি একটি স্কুলের শিক্ষকতা করেন। তিনি এই শাহিনুর লিপি থেকে শিখে, এখন বাইক নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতে যান।
শাহিনুর লিপি বিবিসিনিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট নিউজ কে বলেন, আমাদের দেশের মেয়েদের মোটরবাইক চালানোর বিষয়কে অনেক পরিবার মেনে নিতে চায় না। অথচ তারা পুরুষদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাসে কিংবা বিভিন্ন যানবাহনে উঠেন। পরিবারকে বিষয়টি বুঝতে হবে। একজন নারী বাইক চালানো মানে সে তার নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া। কে, কি বললো সেদিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। সে লক্ষ্য নিয়ে নিজে বাইক চালানো শিখেছি আর অন্যকেও শেখাচ্ছি।
আপনি মোটরবাইক চালানো শিখতে চাইলে যোগাযোগ করুন এই লিংকে।
https://www.facebook.com/profile.php?id=61554720554876&mibextid=ZbWKwL