মো: আল-আমিন, রংপুর ব্যুরো প্রধান: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় অনুমতি ছাড়াই কোন প্রকার ছুটি না নিয়ে ১ বছর ৭ সাত মাস থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত মোছাঃ ফেরদৌসি নামে এক সহকারী শিক্ষিকা। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের খালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। উপজেলা প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন ইতিপূর্বেই।
নানান ধরনের অনিয়মের অভিযোগে ওই শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন থেকে অনুপস্থিত, বিভিন্ন এনজিওর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করা, দায়িত্বহীনতা ও স্বেচ্ছাচারিতা, দুটি মামলা মোকদ্দমায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়াই এমন অভিযোগের কারণে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, ২৬ শে জুন ২০১৬ সালে তিনি সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন ঠাকুরগাঁও জেলার ভুল্লি উপজেলার নতুনহাট খ্রিষ্টানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে ৫ শে ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে তেঁতুলিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নে খালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে বদলীর মাধ্যমে যোগদান করেন। দীর্ঘ ৩ বছর ১৭ দিন নিয়মিত স্কুলে আসলেও ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১ বছর ৭ মাস থেকে তিনি স্কুলে আসেননি।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, তিনি বিভিন্ন এনজিও ও লোকজনের কাছ থেকে ঋণ নেয় চাকুরী দেখিয়ে। পরবর্তীতে সেই টাকা গুলো পরিশোধ না করে তিনি উধাও হন। দুটি মামলায় সাজা হওয়ার কারণে তিনি স্কুলে না আসে আত্মগোপনে আছেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফেরদৌসি দীর্ঘদিন থেকে স্কুলে আসেন না। তাকে বার বার স্কুলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিলো। তিনি স্কুলে আসেননি। তার পরিবার পরিজন নিয়ে কথায় থাকেন তা আমার জানা নেই। তবে তিনি শিক্ষিকা হিসেবে ভালো ছিলেন।
ওই সহকারী শিক্ষিকার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার শশুর বাড়ীর লোকজন বলেন, তারা কথায় থাকেন আমাদের জানা নেই।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই শিক্ষিকা যখন এ স্কুলে যোগদান করে তার আগে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও লোকজনের কাছে বেতনের চেক দিয়ে ঋণ নিয়েছিলো।
সময় মতো লোন পরিশোধ করতে না পেরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো মামলা করতে শুরু করলো। ২ টি মামলার সাজা হয়ে যায়, একটা ১ বছর আরেকটি ৬ মাস। তখন থেকে তিনি পলাতক। তিনটি চিঠি তার স্বামীর ঠিকানায় ও তার বাপের বাড়ির ঠিকানায় পাঠানো হয়েছিলো। পরবর্তীতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চিঠি পাঠানো হয়। আইন মোতাবেক তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমেশ চন্দ্র মজুমদার বলেন, আমার আসার কয়েক দিন হলো বিষয়টি অজানা। জেনে নিশ্চিত করবো।